সহজ কথায়, খুচরা বিক্রয়কারীরা যেসব উপায়ে সব ধরনের শর্ত পূরণ করে ক্রেতাদের কাছে তাদের অর্ডার পৌঁছে দেয়, সেটাকেই ‘ড্রপ শিপিং’ বলে।
সাধারণত যেকোনো পণ্য কিনতে গিয়ে ক্রেতারা অনলাইনে, দোকানে, ফোনকলে বা ক্যাটালগের মাধ্যমে প্রথমে প্রোডাক্ট নির্বাচন করেন। পরবর্তী ধাপে অর্ডারটি পাইকারি বিক্রেতার কাছ থেকে সরাসরি ক্রেতার বাসায় চলে যায়। ফলে খুচরা বিক্রেতাদের হাতে পণ্যের কোনো মজুদ থাকা লাগে না।
প্রথমদিকে ই-কমার্স শিল্পে এই পদ্ধতিতে সবচেয়ে ভালো ব্যবসা করতে পেরেছিল মেইল-অর্ডার কোম্পানিগুলি। পরে সাধারণ অনেক খুচরা দোকান তাদের কার্যক্রম অনলাইনে নিয়ে যায়। সাধারণত যারা ফার্নিচার, ঘরের সামগ্রী বা ম্যাট্রেসের মতো পণ্য বিক্রি করে, তাদের প্রতিটা প্রোডাক্ট সবসময় মজুদ রাখাটা ঝামেলার ব্যাপার। সেজন্য মোটামুটি ২০০০ সালে ই-কমার্সের আবির্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে অনেক খুচরা বিক্রেতা অনলাইনে তাদের অর্ডার ক্রেতাদের কাছে ঠিকমতো ডেলিভারি দেয়ার জন্যে পুরোপুরি ‘ড্রপ শিপিং’-এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
এরপর গত দুই দশকে ই-কমার্স শিল্পে এই ‘ড্রপ শিপিং’কে কেন্দ্র করেই অনেকে আলাদাভাবে ব্যবসা শুরু করেছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে ‘অ্যামাজন’ ও ‘ই-বে’ এর মতো প্ল্যাটফর্মের জন্য। বর্তমানে ‘ড্রপ শিপিং’ নিয়ে যারা ব্যবসা করছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের সাথে পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানির সরাসরি কোনো যোগাযোগ থাকে না। তাই তারা এসব পণ্যের গুণাগুণ বা এর আসল-নকল যাচাই করতে পারে না।
এক্ষেত্রে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে ‘ডাইরেক্ট টু কাস্টমার’ বা ‘ডিটিসি’ (DTC) নামের আরেকটি বিজনেস মডেল। ড্রপ শিপিং আর ‘ডাইরেক্ট টু কাস্টমার’ ব্যবসার মধ্যে পার্থক্য কী? ‘ডিটিসি’ ব্র্যান্ডগুলি গ্রাহকদের কাছে তাদের পণ্য পৌঁছে দিতে ‘ড্রপ শিপিং’ মডেল অনুসরণ করে। তবে পণ্য কীভাবে তৈরি হচ্ছে বা কীভাবে সেগুলি ডেলিভারি হবে, এসব বিষয়ে ‘ড্রপ শিপিং’ ব্যবসায়ীদের চেয়ে তাদের হাতে যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ থাকে। তবে এই দুই ধরনের ব্যবসায়ীরা আসলে খুব বেশি আলাদা না।
বর্তমানে ড্রপ শিপিং ব্যবসা শুরু করা অনেক সহজ। তাই বিভিন্ন শিল্পের অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন তাদের পণ্য ডেলিভারির জন্য ড্রপ শিপিং সার্ভিস চালু করছে।
ড্রপ শিপিং শুরু করার ক্ষেত্রে যেই ধাপটি সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে, সেটা হলো সঠিক পণ্যটি খুঁজে বের করা। আপনি যে পণ্যটি বিক্রি করবেন এবং ক্রেতাদের কাছে যেটার প্রচারণা চালাবেন, সেটা নির্ধারণ করতে গিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। তাই প্রথমেই যেই বিষয়টা নিশ্চিত হতে হবে, সেটা হলো বাজারে এই পণ্যের চাহিদা আছে কিনা কিংবা বাজারে পণ্যটি চলছে কিনা।
অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যবসা বড় করার জন্যে এই মডেল অনেক লাভজনক হতে পারে। তবে এই ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি আনার জন্যে এবং ক্রেতাদের ধরে রাখার জন্য এর আকার বড় করতে হয়। তা না হলে দীর্ঘমেয়াদে এই ব্যবসা থেকে লাভ করা যায় না। এই মডেলের ব্যবসা বড় করার সাথে সাথে একজন বিক্রেতা যেমন পণ্য ডেলিভারির সময় আরো কমিয়ে আনতে পারে, তেমন আরো বিচিত্র ধরনের পণ্য নিয়ে আসতে পারে। ফলে নতুন ক্রেতারাও আরো বেশি আকৃষ্ট হয়।
মোটকথা, সময়ের সাথে সাথে যত বেশি মানুষ বুঝতে পারছে এর মাধ্যমে দ্রুত মুনাফা অর্জন করা সম্ভব, ভার্চুয়াল মার্কেটপ্লেস কেন্দ্র করে তত বেশি স্টার্ট-আপ চালু হচ্ছে। ফলে ই-কমার্স শিল্পেও তাদের চাহিদা বাড়ছে।
এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে টেক প্ল্যাটফর্মগুলি। কারণ প্রোডাক্ট বিক্রি করে সবচেয়ে বেশি মুনাফা লাভ করতে পারছে তারাই। তবে বিশ্বব্যাপী প্রতিনিয়তই প্রচুর ব্যবসায়ীরা ড্রপ শিপিং নিয়ে কাজ শুরু করছেন এই আশা থেকে যে, ই-কমার্সের বিস্তৃতি বাড়ার ফলে টেক প্ল্যাটফর্মের পরে তারাই এখান থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারবেন।
১.কম মুনাফার পেশা-
যেহেতু অনলাইন স্টোরটির মালামাল আপনার নিজের না তাই ঝামেলা কম, কিন্তু ফলে মুনাফাও কম আসবে ৷
যেহেতু আপনি কম টাকা বিনিয়োগ করবেন, সেহেতু কম টাকা মুনাফা পাবেন ৷ যার মানে হলো আপনাকে ভাসমান নৌকার মত ব্যবসা করতে হবে, একা একা লাভ ভোগ করতে পারবেন না ৷
আসলে আপনার প্রত্যেকটি বিক্রির বেশির ভাগ টাকাই সরবরাহকারীর কাছে চলে যাবে ৷ কারণ আপনি কিন্তু হোলসেল Prize এ পণ্যটি কিনতে পারছেন না।
তাহলে লাভ কেমন হয়?
আপনি যা ড্রপ শিপিং থেকে উপার্জন করবেন সেখান থেকে বিভিন্ন ধরণের খরচ আছে। যেমন : বিজ্ঞাপন, সাইট রক্ষণাবেক্ষণ, বিক্রয় অর্ডার পরিচালনার জন্য একটি খরচ, অফিসে সময় দেওয়া অথবা অনলাইনে সময় দেওয়া ইত্যাদি।
বিভিন্ন ব্যাবসায়ীর মতো, আপনি নিচের চলকগুলি ব্যবহার করে আয়ের একটা ধারণা পেতে পারেন ৷ তবে এটা আপনার অবস্থানের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল ৷
২০% মার্জিন
২% রূপান্তর হার
পণ্যের বিক্রয় মূল্য প্রতিযোগিতামূলক রাখতে আপনাকে আপনার মুনাফার পরিমাণ কমাতে হবে। আপনি যদি ২০% লাভের আশা সব সময় করে থাকেন তবে অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আপনাকে পেছনে ফেলে দিবে।
সর্বোপরি, আপনি লক্ষ্য করবেন যে আপনার লাভটি ট্র্যাফিকের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, তাই আপনি যদি নতুন কোনো ই-কমার্স ব্র্যান্ড তৈরি করেন এবং ক্রেতার কাছে নির্ভরতা তৈরি করতে চান, আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পরিশ্রম করতে হবে৷ এছাড়াও, বিগ কমার্সের অ্যাডাম এনফ্রয়ের মতে, আপনি যেভাবেই ড্রপ শিপিং চালান না কেন এখানে অনেক ধরণের কাজ থাকে। ড্রপশিপারদের সর্বদা তাদের সরবরাহকারী, অর্ডার প্রসেসিং, রিটার্ন এবং গ্রাহক সেবা নিয়ে কাজ করতে হয় আর একটা কথা, যদি মনে করেন যে, আপনি আপনার ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিত প্রচুর ট্রাফিক আনতে পারবেন তবে ড্রপ শিপিং ব্যবসা শুরু করা যুক্তিসঙ্গত।
২. অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক-
আপনি যদি আশাবাদী উদ্যোক্তা হয়ে থাকেন তবে “লো ওভারহেড” অংশের দিকে মনোযোগ দিবেন ৷
যেহেতু ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করার জন্য তুলনা মূলক অল্প পুঁজির প্রয়োজন হয়, তাই অল্প পুঁজি মানেই প্রচুর প্রতিযোগিতা। মূলত, একটি নাম করা ই-কমার্স ওয়েবসাইটের চেয়ে নতুন ড্রপ শিপারদের একটু কম দামের অফার দিয়ে বাজারে পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি করতে হয় ৷ আমি উপরে যা বলেছিলাম তার পুনরাবৃত্তি করে বলছি, ছোট ব্যবসায় কেবল দাম কমিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে, যে জন্য আপনাকে মুনাফা কমাতে হবে তবে যখন কাস্টমার আপনাকে চিনে ফেলবে তখন আপনি কিছুটা পণ্যের মূল্য বাড়াতে পারেন ওই সময় আপনার মুনাফা কিছুটা বৃদ্ধি পাবে ৷ তবে একটা বিষয় মনে রাখবেন সরবরাহকারীদের সাথে একচেটিয়া চুক্তি না করাই ভালো। এর অর্থ প্রতিযোগীরা আপনার ওই একই পণ্য বিক্রি করতে পারে এবং দাম একই বা আপনার থেকে কম রাখতে পারে সে ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসা একেবারে বসে যাবে। কারণ যখন গ্রাহকরা একই পণ্য সস্তায় অন্য কারও কাছ থেকে কিনতে পারেন – কেন তারা আপনার কাছ থেকে কিনবেন? যদি কম না পায় আপনার নিকট!
৩. সরবরাহকারীদের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না-
স্ট্যান্ডার্ড ই-কমার্সে, গ্রাহকরা যদি পণ্যের গুণমান, পণ্য ডেলিভারির গতি বা রিটার্ন পলিসি সম্পর্কে কোনো অভিযোগ করেন তবে আপনি নিজেই এই সমস্যাগুলির সমাধান করতে পারেন। ড্রপশিপিংয়ে আপনি আপনার সরবরাহকারীর দয়ায় কমবেশি রয়েছেন কারণ এ বিষয় গুলোর উপর আপনার তেমন কোনো হাত নাই – তবে আপনি আপনার গ্রাহকদের সাথে সরাসরি কথা বলতে পারবেন ৷ ড্রপশিপাররা মূলত আটকা পড়ে যায়, সমস্যা সমাধানে সরবরাহকারীর আশ্বাস, একই সাথে গ্রাহককে তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা কিছু বিষয় সম্পর্কে আশ্বাস দেওয়ার কারণে ৷ সর্বোপরি, যোগাযোগের ক্ষেত্রেও বিলম্ব হয় ৷ কারণ ড্রপশিপার গ্রাহক এবং সরবরাহকারীদের মধ্যে একটি বাধা। যদি কেউ ধীরে ধীরে উত্তর দেয় তবে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায় এবং সমস্যাগুলো সমাধান করতে আরও বেশি সময় লাগে। ই- কমার্সে গ্রাহক সেবা সর্বজনীন ও বাধ্যতামূলক বলা চলে। এমনকি সামান্য সীমালঙ্ঘন – যেমন ডেলিভারির ক্ষেত্রে বিলম্ব – গ্রাহকদের সরাসরি আপনার প্রতিযোগীদের দিকে ঠেলে দেয়। যদি গ্রাহকরা এটি সম্পর্কে সোচ্চার হয় তবে খুব শীগ্রই আপনার ব্যবসা শুরু হওয়ার আগেই শেষ করতে পারে।
৪. আইনী দায়বদ্ধতা সম্পর্কিত সমস্যা-
যদিও এটি ড্রপশিপারদের জন্য বড়ো কোনো সমস্যা নয়। কিছু সরবরাহকারী দাবি যা করে সে মতো কথা রাখে না আসলে আপনি জানেন না যে পণ্যগুলি কোথা থেকে এসেছে । এমনকি আরও প্রতারণামূলক হয় যখন সরবরাহকারীরা পণ্যের উপর অবৈধভাবে ট্রেডমার্কযুক্ত লোগো ব্যবহার করে বসেন যা অনেক খারাপ হতে পারে ৷ আপনার সরবরাহকারীদের যে কোন অবৈধ কার্যকলাপই আপনার ক্রেতাদের প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিরুপ মনোভাব তৈরি করতে পারে ৷ এই সমস্যাগুলো সরবরাহকারীর সাথে ভালো মতো একটি চুক্তি সম্পাদন করার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। অবশ্যই সরবরাহকারী পছন্দ করার সময় আপনি এটি ভালো মতো খেয়াল রাখবেন ৷
৫. ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলা কঠিন-
পর্দার আড়ালে থাকা গীতিকারদের মতো, ড্রপশিপারদেরও অবশ্যই বুঝতে হবে যে তাদের কাজের কৃতিত্ব অন্য কারও কাছে যায়। আপনি যে পণ্যটি বিক্রি করছেন তা যদি আশ্চর্যজনক হয় তবে আপনার গ্রাহকরা বেশিরভাগই পণ্যের ব্র্যান্ডের দিকে মনোনিবেশ করবেন এবং শপিংয়ের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণরূপে ভুলে যাবেন। সর্বোপরি, এটি আপনার বাক্সে লোগোর মত নয়। ই-কমার্সে ব্র্যান্ডিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ক্রেতারা প্রথমে তাদের পছন্দসই অনলাইন স্টোরগুলিতে যান। গ্রাহকের নিকট বিশ্বস্ত হওয়া ছাড়া আপনি কোনো অনলাইন ব্যবসায় বজায় রাখার জন্য নিয়মিত ট্র্যাফিক পাবেন না, বিশেষ করে ড্রপশিপিংয়ে। আবার, ড্রপশিপিংয়ে ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডগুলি নতুনদের চেয়ে আরও বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ৷
ড্রপ শিপিংয়ের সুবিধাসমূহ-
ড্রপশিপিং নতুন উদ্যোক্তাদের শুরু করার জন্য একটি চমৎকার ব্যবসায়িক মডেল কারণ এটি অভিগমন যোগ্য। ড্রপ শিপিংয়ের মাধ্যমে আপনি সীমাবদ্ধ ডাউনসাইড সহ দ্রুত বিভিন্ন ব্যবসায়িক ধারণাগুলো পরীক্ষা করতে পারবেন, যা আপনাকে বাজারে চাহিদা সম্পন্ন পণ্য নির্বাচন করতে এবং বাজারজাত করতে হয় সে সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে সহায়তা করবে।
ড্রপশিপিং কেন এমন জনপ্রিয় মডেল তার কয়েকটি সুবিধা নিম্নোক্ত-
১. শুরু করা অত্যন্ত সহজ-
ড্রপ শিপিংয়ে আপনাকে পণ্য কিনে স্টক করে রাখার জন্য কোনো টাকা খরচ করতে হয় না। তাই, শুধু হোস্টিং, ডোমেইন এবং ওয়েব ডেভেলপ করতে যে খরচ করতে হয় তা করলেই হয় ৷ অতিরিক্ত আর কোনো ব্যয় নেই ৷ ফলে আপনার ব্যবসায় মুনাফা কমার ঝুঁকি কম ৷ এছাড়া আপনি চাইলে আপনার স্টোরে বেশি বিক্রি হওয়া পণ্যগুলির পাশাপাশি আপনার নিজস্ব পণ্যগুলোও বিক্রি করতে পারবেন ৷
২. স্বল্প মূলধন প্রয়োজন-
ড্রপ শিপিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো কয়েক লক্ষ টাকা বিনিয়োগ না করেই একটি ই-কমার্স সাইট চালু করা যায়। স্বাভাবিক ভাবেই খুচরা বিক্রেতাদের বিপুল পরিমাণ মূলধন পণ্য কিনে স্টক করে রাখতে খরচ করতে হয়। ড্রপ শিপিংয়ে আপনার কোন পণ্য বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত, নতুন কোনো পন্য কিনতে হয় না ৷ ক্রেতাদের টাকা দিয়েই পণ্যের দাম পরিশোধ করতে পারবেন ৷ অগ্রিম বিনিয়োগ না করেই পণ্যের উৎস খুঁজে অল্প মূলধন নিয়েই একটি ড্রপ শিপিং ব্যবসায় শুরু করা সম্ভব ৷ স্বাভাবিকভাবেই খুচরা ব্যাবসায়ীদের মতো আপনার কোনো পণ্য অগ্রিম কিনতে হচ্ছে না, তাই ড্রপ শিপিং সাইট এ ঝুঁকি কম ৷
৩. ন্যূনতম ঝুঁকি-
একটি ড্রপ শিপিং ই-কমার্স ওয়েবসাইট বিনামূল্যে শুরু করা যেতে পারে। কেবলমাত্র একটি ডোমেন এবং ভালো হোস্টিং নিতে হবে ৷ নতুবা ব্যবসা হারিয়ে যেতে পারে, পরে ব্যবসায়টি আর সম্প্রসারণ করা সম্ভব নয় ৷ আবার আপনি যদি লাভ করতে সক্ষম না হন, তবে আপনি সহজেই কোনো ঝুঁকি ছাড়াই ফিরে আসতে পারবেন।
৪. সরবরাহকারী এবং ড্রপশিপিং সাইটের সুবিধা-
ড্রপশিপারকে পণ্য পরিবহণ এবং প্যাকেজিং সম্পর্কে চিন্তা করতে হয় না ৷ সরবরাহকারী পণ্য বিপণন এবং প্রচার উভয়ই করে থাকে ৷ ড্রপ শিপাররা একবারে একাধিক পাইকারদের সাথে কাজ করতে পারে।
৫. মাথা কম খাটানো লাগে-
যেহেতু আপনাকে মাল কেনা কিংবা গুদাম পরিচালনা করার দরকার নেই, সেহেতু আপনার মাথা খাটানো লাগবে না বেশি । প্রকৃতপক্ষে, অনেক সফল ড্রপশিপিং স্টোর বাড়ি বা বাসা-ভিত্তিক ব্যবসা হিসাবে পরিচালিত হয়, এটি পরিচালনা করতে একটি ল্যাপটপ হলেই চলে এবং অপারেট করার জন্য কয়েকটি জিনিসের জন্য খরচ করতে হয়। আপনার ড্রপ শিপিং ব্যবসায়ের সম্প্রসারণের সাথে সাথে ওই সকল ব্যয়গুলি সম্ভবত বাড়বে ৷ তবে প্রচলিত ব্যবসাগুলোর তুলনায় এই ক্ষেত্রে ব্যয় একটু কম হবে ৷
৬. নমনীয় অবস্থান-
একটি ড্রপ শিপিং ব্যবসায় যেকোনো জায়গায় করা যায় ৷ শুধু ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন ৷ আপনি চাইলে সরবরাহকারী ও ক্রেতা উভয়ের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবেন এবং ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন ৷
৭. একাধিক পণ্য বিক্রি করা-
যেহেতু পূর্বে আপনাকে কোনো পণ্য অগ্রিম কিনতে হয় না, তাই আপনি যেকোনো পণ্যের অফার দিতে পারবেন ড্রপ শিপিংয়ে ৷ আপনার স্টকে যদিও কোনো পণ্য থাকে সেটাও কিন্তু বিক্রি করতে পারবেন ৷ এজন্য আপনাকে আলাদা করে কোনো খরচ করতে হবে না ৷
৮. যাচাই করা সহজ-
ড্রপশিপিংয়ের মূল সুবিধা হলো, বিপুল পরিমাণে পণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আগে পণ্যগুলি তালিকাভুক্ত করণ এবং সম্ভাব্য ভাবে বিক্রয় করার ক্ষমতা ৷
৯. পরিমাপ করা সহজ-
একজন প্রথাগত খুচরা ব্যবসায়ীদের চেয়ে যদি আপনি পণ্যের অর্ডার তিন গুন বেশি পান, তবে আপনাকে পরিশ্রমও তার থেকে তিন গুন বেশি করতে হবে ৷ ড্রপশিপিং এ অতিরিক্ত অর্ডারগুলি প্রক্রিয়া করার বেশিরভাগ কাজ সরবরাহকারীরা বহন করে, যার ফলে আপনার কাজ নিয়ে কোন ব্যথা থাকবে না।
বিক্রয় বৃদ্ধি সর্বদা অতিরিক্ত কাজ নিয়ে আসে – বিশেষত গ্রাহক সহায়তার সাথে সম্পর্কিত – তবে যে ব্যবসাগুলি ড্রপশিপিং স্কেল ব্যবহার করে, তা প্রথাগত ই-কমার্স ব্যবসায়ের তুলনায় ভাল।
ড্রপ শিপিংয়ের অসুবিধাসমূহ-
অন্যান্য ব্যবসায়ের মত ড্রপ শিপিং ব্যবসাতেও কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে ৷ যাইহোক, উপরের সুবিধাগুলো বিবেচনা করে আপনি এই অসুবিধাগুলো এড়িয়ে যেতে পারেন ৷
১. তুমুল প্রতিযোগীতা-
প্রায় সকল ই-কমার্স ব্যবসাতে রয়েছে ব্যাপক প্রতিযোগীতা ৷ এই কারণে অনলাইন স্টোরের মালিকগণ মানসম্মত সেবা প্রদান করে ব্যবসা দাঁড় করাতে পারে এবং পণ্য কিনতে ক্রেতারা বেশি পছন্দ করে থাকে ৷ অতিরিক্ত প্রতিযোগিতা একজন ড্রপ শিপারের সমস্যা হতে পারে যদি ঐ ব্যক্তি তাদের পণ্য বিপণন সম্পর্কে সতর্ক না হয় ৷ নতুন স্টোর প্রতিদিন হঠাৎ করে গড়ে ওঠে কারণ এটা নকল করা সহজ পাশাপাশি অন্যরা আপনার ওয়েবসাইটের কোড গুলো কপি করতে পারে ৷
২. মুনাফা কম-
হ্যাঁ! অধিকাংশ ড্রপ শিপারদের প্রবণতা হলো হাল ছেড়ে দেওয়া কারণ মুনাফা খুব কম ৷ যাই হোক, আপনি যদি এটি আন্তরিকতার সঙ্গে করেন, ড্রপ শিপিং কোনো ক্ষণস্থায়ী ব্যবসায় নয় ৷ এটি সব সময় লেগে থাকা এবং ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠার মতো। আপনি কীভাবে নিম্ন মুনাফার মার্জিনকে বিশাল আকারে পরিণত করবেন তা চিন্তা করুন ৷ আপনি যদি প্রতিদিন ১০ টি পণ্য বিক্রি করে থাকেন তবে এটি ৫০ স্কেল এ করুন এবং এতে আপনার লাভের পরিমাণ বেশি হবে।
ড্রপশিপিং ব্যবসায়ের গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো লজিস্টিক সম্পর্কে আপনার চিন্তা করতে হবে না। কেবল ট্র্যাকিং কোডটি পান এবং এটি আপনার গ্রাহকদের কাছে ফরোয়ার্ড করুন এবং আপনাকে কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। এইভাবে আপনি কম মার্জিনে আরও বেশি লাভ অর্জন করবেন।
৩. পণ্যের সম্পূর্ণ দায়বদ্ধতা-
ড্রপশিপিং হলো এমন একটি ব্যবসা যেখানে আপনি এমন কোনো পণ্য বিক্রি করবেন যা আপনি আসলে দেখেন নি। অতএব, পণ্যের ব্যর্থতার সম্ভাবনা বেশি। যখন এটি ঘটে তখন গ্রাহকের কাছে আসল পরিমাণ ফেরত দেওয়া এবং সরবরাহকারীর কাছে পণ্যটি ফিরিয়ে দেওয়ার পুরো দায় আপনার উপর বর্তায়।
তবে এর অর্থ এই নয় যে আপনি আতঙ্কিত হওয়া শুরু করবেন। পরিবর্তে, একটি ৩০ দিনের রিফান্ড নীতিমালা তৈরি করুন যাতে গ্রাহক পণ্যটি (যদি) ক্রয় করে সন্তুষ্ট না হন তবে তা ফিরিয়ে দিতে পারে। ক্রেতাকে কেবল পণ্যটি শিপিংয়ের ঠিকানায় ফেরত পাঠাতে হবে।
দ্রষ্টব্য: এতে গ্রাহকের কাছে শিপিং চার্জ লাগতে পারে। সুতরাং, আপনাকে অবশ্যই আপনার ফেরত এবং ফেরতের নীতিতে এই ধারাটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করবেন ৷
৪. অর্ডার পরিচালনা করা ক্লান্তিকর হতে পারে-
বেশিরভাগ ড্রপশিপার তাদের চুল টানবে এমন এক সময় যখন তাদের কোনো পণ্য ভাইরাল হয়। তাদের তখন হাজার হাজার অর্ডার পূরণ করতে হয় এবং অর্ডার পরিচালনা করা একটু কঠিন কাজ হতে পারে। তবে অনেক ড্রপশিপিং প্লাগইন রয়েছে যা আপনাকে সাহায্য করবে। এটি এখন কোনো বড় সমস্যা নয়। ড্রপশিপাররা এখন তাদের ডাব্লুকমার্স ড্রপশিপিং স্টোরটিতে AliDropship বা WooDropship প্লাগইন ইনস্টল করতে পারে এবং এক ক্লিকের সাথে অর্ডারগুলি পূরণ করতে পারে।
৫. শিপিং জটিলতা-
আপনি যদি একাধিক সরবরাহকারী সাথে কাজ করেন এবং আপনার অনলাইন স্টোরের পণ্যগুলো বিভিন্ন ই-কমার্স এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয় তবে এটি আপনার শিপিংয়ের খরচ কে জটিল করে তুলবে।
ধরা যাক যে, কোনো গ্রাহক তিনটি আইটেমের জন্য একটি অর্ডার রাখে, সেগুলি কেবল পৃথক পৃথক সরবরাহকারীদের থেকে পাওয়া যায় ৷ প্রতিটি আইটেম গ্রাহককে প্রেরণের জন্য আপনাকে তিনটি পৃথক শিপিং চার্জ নিতে হবে, তবে গ্রাহককে এই চার্জটি প্রদান করানো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এমনকি যখন এই চার্জগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তখন এই হিসাবগুলো বজায় রাখা কঠিন হতে পারে।
৬. সরবরাহকারীর ভূল-
আপনি কি কখনো এমন কোনো কিছুর জন্য দোষারোপিত হয়েছেন যেখানে আপনার দোষ ছিল না, তবে আপনাকে যেভাবেই হোক ভুলের দায় স্বীকার করতে হয়েছিল?
এমনকি সেরা ড্রপশিপ সরবরাহকারীরা অর্ডারগুলো পূরণ করতে ভুল করে — এমন ভুল যার জন্য আপনাকে দায় নিতে হবে এবং ক্ষমা চাইতে হবে। মাঝারি এবং নিম্নমানের সরবরাহকারীরা নিখোঁজ আইটেম, বোটেড শিপমেন্ট এবং নিম্নমানের প্যাকিংয়ের সাথে অনেক বড়ো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে যা আপনার ব্যবসায়ের খ্যাতি নষ্ট করতে পারে।
কিভাবে বাংলাদেশে ড্রপশিপিং ব্যবসায় শুরু করবেন? How to Dropshipping in Bangladesh
ই-কমার্স পরিচালনার জন্য বর্তমান বিধিগুলির কারণে, বিদেশ থেকে অর্থ পাঠানো এবং গ্রহণ করা, এটি এখন কিছুটা জটিল হতে পারে। বাংলাদেশে শিপিংয়ের ব্যবসা শুরু করতে ধাপে ধাপে বুঝতে পারেন-
১. আপনার ব্যবসা নিবন্ধন করুন-
বর্তমান বাংলাদেশ আইনের অধীনে আপনাকে যে কোনও ব্যবসায় নিবন্ধন করতে হবে। আপনার ব্যবসায়ের নিবন্ধকরণের আরও অনেক উপায় রয়েছে। আমি কীভাবে বাংলাদেশে কোনও ব্যবসা বা সংস্থা নিবন্ধন করতে পারি সে সম্পর্কে আমার ওয়েবসাইটে আপনার জন্য কিছু নিবন্ধ লিখেছি। আপনি কর্পোরেট বিষয়ক বিভাগের পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে একটি ব্যবসা নিবন্ধন করতে পারেন। আপনার সরাসরি শিপিং ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে নিবন্ধকরণ বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত, তবে বাংলাদেশ এখনও নিবন্ধকরণ কার্যকর করেনি। এটি বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারী কর্মকর্তাদের কারণে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে একবার আপনি কোন প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিবন্ধভুক্ত হয়ে গেলে আপনি সরকার থেকে অনেক সুবিধা পেতে পারেন আজ, বাংলাদেশে যে কোন কিছু কেনা বেচা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পেমেন্ট প্রক্রিয়াগুলির জন্য আপনার এটির প্রয়োজন হবে।
২. একটি চলতি অ্যাকাউন্ট খুলুন-
আপনি এখানে অর্থ উপার্জন করতে এসেছেন। সুতরাং, পরবর্তী পদক্ষেপটি হলো বাংলাদেশের যে কোনো ব্যাংকের সাথে একটি চলতি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। রিজার্ভ ব্যাংকগুলির জন্য অ্যাকাউন্ট নম্বর দিতে হয় এ জন্য ব্যাংকগুলির নির্দিষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। আমি এখানে একটি বিদেশী ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার পরামর্শ দিচ্ছি। কারণ তাদের বিশ্বব্যাপী শাখা এবং ব্যাংকগুলির বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে। এটি বাণিজ্য সহজ এবং দ্রুত করে তোলে। সরাসরি শিপিং ব্যবসায়ের জন্য আপনাকে ব্যাঙ্কের সাথে একটি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে যার মাধ্যমে বিদেশী সরবরাহকারীদের কাছে রেমিট্যান্স সরবরাহ করতে পারবেন। এছাড়াও, বিদেশী লেনদেনে একটি খরচ আছে সে দিকে খেয়াল রাখুন। কিছু ব্যাংক রেমিট্যান্সের জন্য বাড়তি ফি চার্জ করে, প্রতি লেনদেনের জন্য ৮০ থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা পর্যন্ত।
মনে রাখবেন, এই ব্যয়গুলি আপনার লাভ থেকে বের করে আনতে হবে।
৩. একটি পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলুন-
আপনি যদি বাংলাদেশে ড্রপ শিপিংয়ের ব্যবসা শুরু করতে চান তবে আপনাকে একটি পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
প্রায়ই, বিদেশী সরবরাহকারীরা আপনার আদেশ কৃত পণ্যগুলির জন্য অর্থ দ্রুত গ্রহণ করতে চায়।
এবং কিছু কিছু বিদেশী সরবরাহকারী কেবল পেপালের মাধ্যমে অর্থ প্রদানের জন্য অনুরোধ করবে। পেপাল একটি দ্রুত গ্লোবাল পেমেন্ট গেটওয়ে। সুতরাং, এটি বিশ্বব্যাপী ড্রপশিপিং ব্যবসায়ে খুব জনপ্রিয়। পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলতে আপনার জিএসটিআইএন নম্বর এবং অন্যদের মধ্যে কারেন্ট অ্যাকাউন্টের বিশদ প্রয়োজন। পেপাল আপনার আবেদন গ্রহণ করার আগে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং অন্যান্য তথ্য যাচাই করবে। সাধারণত, তারা আপনার কাগজ পত্র গুলি পরীক্ষা করতে, আপনার কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু অর্থ কেটে নেবে। অবশ্যই, পেপাল আপনার একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিতে আপনার অনুমতি চাইবে এবং আপনার ব্যাংক অন্য কাউকে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করার অনুমতি দেয় না।
৪. পণ্যের একটি তালিকা তৈরি করুন-
অফিসিয়াল এবং ব্যাংকের আনুষ্ঠানিকতা সমাপ্ত হওয়ার সাথে সাথে আপনি এখন বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করার জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। এখন প্রথম পদক্ষেপটি চূড়ান্ত করুন এবং আপনি যে পণ্যগুলি ড্রপার হিসাবে বিক্রি করতে চান তার একটি তালিকা তৈরি করুন। এটি বেশ কঠিন হতে পারে। অতএব, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। বিভ্রান্তিকর হলেও, আপনাকে অনলাইনে দ্রুত বিক্রয় হওয়া পণ্যগুলি সনাক্ত করতে হবে। আপনি অ্যামাজন এবং ফ্লিপকার্টের মতো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের সাথে প্রতিযোগিতা করবেন। পাশাপাশি ফেসবুক, এটসি এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলিতে একটি বাজার রয়েছে। অতএব, অনলাইনে সর্বাধিক বিক্রিত সামগ্রী সন্ধান করার জন্য চেষ্টা করুন। অনলাইনে বিক্রির জন্য প্রধান ট্রেন্ডিং এবং চিরসবুজ আইটেমগুলির দিকে নজর দেওয়া ভাল। সাধারণত, মোবাইল ফোনের আনুষাঙ্গিক, অটোমোবাইলের যন্ত্রপাতিগুলির জন্য খুচরা যন্ত্রাংশ ইত্যাদি। আপনি যে সেক্টরে প্রবেশ করতে চান সেটিকে চূড়ান্ত করুন এবং আপনার ড্রপ শিপিংয়ের বাজার থেকে আপনি যে পণ্যগুলি বিক্রি করতে চান তার তালিকা তৈরী করুন।
৫. বাংলাদেশের আইনকানুন যাচাই করে দেখুন-
এটি বাংলাদেশে একটি ব্যবসা শুরু করার আগে আপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ-
বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য আমদানি ও বিক্রয় সম্পর্কিত বিধি পরীক্ষা করে দেখুন। উদাহরণস্বরূপ, যে কোনো ফ্রিকোয়েন্সিতে রিমোট কন্ট্রোল সহ খেলনা বিক্রি করা নিষিদ্ধ। একইভাবে, খাদ্য আইটেমগুলি বাংলাদেশের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি কর্তৃক অনুমোদিত না হলে বিক্রি করা যাবে না। বিদেশ থেকে ওষুধ আমদানির বিষয়েও কঠোর নিয়ম রয়েছে, যার অর্থ আপনি কোনো অনুমোদন ছাড়াই ফার্মেসি খুলতে পারবেন না। এছাড়াও, কিছু পণ্য বাংলাদেশে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন সরকারী কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদনের প্রয়োজন হতে পারে। আমদানির জন্য নিষিদ্ধ, সীমাবদ্ধ এবং অনুমোদিত পণ্যগুলির তালিকা প্রায়ই সংশোধন করা হয়। এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিপুল সংখ্যক পণ্য চীন থেকে জাহাজে আসে ৷
এছাড়াও, বিদেশে ড্রপ শিপিং সরবরাহকারীদের থেকে কেনা আইটেমগুলিতে আমদানি শুল্ক চেক করুন। সুস্পষ্ট কারণে, নির্দিষ্ট দামে অর্ডার দেওয়ার সময় আপনার গ্রাহককে কোনো ফি দিতে বলা হবে না।
৬. সেরা দামের জন্য সরবরাহকারীদের সাথে যোগাযোগ করুন-
আলী এক্সপ্রেস সহ অনেকগুলি ওয়েবসাইট রয়েছে যারা আপনাকে উৎপাদক ও পরিবেশকদের সাথে খুচরা বিক্রেতাদের যোগাযোগ করে দিবে। এই শীর্ষ ওয়েবসাইটে যোগাযোগের অনন্য সুবিধা রয়েছে। তাদের এমন অনেক পণ্য রয়েছে যা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয় না। এই পণ্যগুলি জাহাজে বহন করা সহজ। তাই দেশে এনে দেখলেন দেশীয় আইনের ভেতর পড়ে না। তাই কিছু বিক্রি করার আগে আমদানি আইন ও শুল্ক যাচাই করা ভাল। এই শীর্ষ ওয়েবসাইটগুলি ভালো প্রসংশা পত্র সহ সরবরাহকারীদের তালিকা তৈরী করে। যা আপনি দেখতে পারবেন। সুতরাং, সরবরাহকারীরা আপনার তহবিলগুলি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার বা নিকৃষ্ট পণ্য বিতরণের সম্ভাবনা কম। ড্রপশিপিংয়ের জন্য এটি প্রয়োজনীয় কারণ আপনি প্রতিটি পণ্যকে শারীরিকভাবে পরিদর্শন করতে পারবেন না। আপনাকে গুণমান এবং পারফরম্যান্সের মাধ্যমে সরবরাহকারী পণ্যটি গ্রহণ করতে হবে।
৭. চূড়ান্ত মূল্য এবং রিটার্ন পলিসি-
সরবরাহকারীদের চূড়ান্ত করার পরে, আপনি বাংলাদেশে আপনার ড্রপশিপিং ব্যবসা থেকে যে পণ্যগুলি বিক্রয় করতে চান তার জন্য তার চাহিদা কি তা খোঁজ করুন। প্রায়ই সরবরাহকারীরা আপনার কাছে গড় অর্ডারের পরিমাণের কথা জিজ্ঞাসা করতে পারে। আপনি বাজার এবং ব্যাগিং অর্ডার সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই জাতীয় প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ভাল নয়। এছাড়াও, সরবরাহকারীর ফেরতের নীতি রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হউন। প্রায়ই গ্রাহকরা এমন পণ্য পান যা কাজ করে না বা তাদের প্রত্যাশা পূরণ করে না। মাঝে মাঝে সঠিক পরিচালনার অভাবে আইটেমগুলি সরবরাহ করার সময় ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। আপনি কোনো গ্রাহককে ভুল বা ক্ষতিগ্রস্থ পণ্য গ্রহণ করতে বলতে পারবেন না। অতএব, আপনার কাছে দুটি বিকল্প রয়েছে – রিটার্ন গ্রহণ এবং ক্ষতি হিসাবে লেখার জন্য অথবা সরবরাহকারীকে এটি পুনরায় নিতে এবং প্রতিস্থাপন করতে বলতে পারেন।
৮. আপনার বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করুন-
২০২০ সালে আপনার ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করার এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি হলো আপনি যে পণ্যগুলি বিক্রি করবেন তার জন্য একটি বিক্রয়মূল্য চূড়ান্ত করা। এর অর্থ হলো আপনি আমদানি শুল্ক, জিএসটি এবং অন্যান্য প্রযোজ্য শুল্ক, রিটার্ন, এবং ফেরত, অনলাইন পেমেন্টের জন্য ব্যাংক ফি এবং অবশ্যই আপনার অপারেটিং ব্যয় সহ সমস্ত বিষয় বিবেচনা করবেন।উপরের সমস্ত উপাদান অন্তর্ভুক্ত করুন এবং একবারে ন্যায্য মান পৌঁছে যাওয়ার পরে আপনার নিজের মার্জিন যুক্ত করুন। মনে রাখবেন, বেশিরভাগ ড্রপশিপারগণ ব্যবসার বাইরে চলে গেছে কারণ তারা অবাস্তব মূল্যে জিনিস বিক্রি করার চেষ্টা করেছিল। আপনি যদি এর আমদানি কর এবং অন্যান্য চার্জের সাথে স্টাফের ব্যয় এবং অন্যান্য ব্যয় যোগ করেন তবে আপনি অনেক কম দাম দিয়ে শেষ করতে পারেন। যদি এটি ঘটে থাকে তবে আপনার কাছে কেবল একটি বিকল্প রয়েছে: কোনো কারণে অর্ডার বাতিল হলে এবং ক্রেতার কাছে অর্থ ফেরত দিন।
তবে এটি একটি ভুল হিসাবে আপনার খ্যাতি নষ্ট করতে পারে।
৯. একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট বা মার্কেটপ্লেস খুলুন-
বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করার উপযোগী উপায় হলো আপনার নিজস্ব ই কমার্স ওয়েবসাইট শুরু করা।
আমি আপনাকে অ্যামাজন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সরাসরি প্রতিযোগী হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি না। আপনার নিজস্ব ড্রপশিপিং ওয়েবসাইট আপনার ব্যবসাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। এবং কিছু ই-কমার্স পোর্টালের বাজারের চেয়ে ডিজিটালি আপনার ড্রপশিপিং ওয়েবসাইট বাজারজাত করা অনেক সহজ। ২০২০ সালে বাংলাদেশে একটি ওয়েবসাইট স্থাপনের সর্বনিম্ন ব্যয় হয় মাত্র ৩০০০ টাকা। তবে আপনি যদি বাজারটি বাছাই করেন তবে শোপিফাই বিবেচনা করুন। শোপিফাই বাংলাদেশে অনেক জনপ্রিয় কারণ এটি আমেরিকান এবং অন্যান্য পশ্চিমা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করে। খুব কম খাটোনির জন্য আপনি ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে একটি ই-কমার্স স্টোরও খুলতে পারেন।
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসের একমাত্র খারাপ দিক হলো আপনার ট্রাফিক আপনার অঞ্চল বা শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
এছাড়াও, ফেসবুক ব্যবসায় বিবেচনা করুন যা আপনাকে একটি ছোট মাসিক সাবস্ক্রিপশনের জন্য পুরো বাজার খুলতে সহায়তা করে তা ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন নিরাপত্তা জনিত সমস্যাও ফেইসবুক নিজে থেকেই সমাধান করে। আর এতে পরিচালনা খরচ এবং মার্কেটিং খরচ অনেক কম হয়ে থাকে। অর্ডার দেওয়ার জন্য এবং লোকদের বেতন দেওয়ার জন্য আপনি ফেসবুক বিজনেস পেজ একটি অর্থপ্রদানের সিস্টেমকে সংহত করতে পারেন।
১০. সংহতকরণ সরঞ্জাম, অ্যাপ্লিকেশন এবং উইজেটসমূহ-
আপনার ড্রপশিপিং ওয়েবসাইট বা মার্কেটপ্লেসের সাথে সংযোগ করার জন্য সেরা সরঞ্জাম, অ্যাপ্লিকেশন এবং উইজেটগুলো আপনার দরকার হবে ৷ প্রচুর সরঞ্জাম, অ্যাপ্লিকেশন এবং উইজেট এ অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে যা আপনাকে বাংলাদেশে একটি সফল ড্রপশিপার হতে সহায়তা করবে। এই অ্যাপস, উইজেট এবং সরঞ্জামগুলি আপনাকে প্রচুর ড্রপশিপিং প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় করতে এবং গতিতে সহায়তা করে থাকবে ৷ আপনার ড্রপশিপিং মার্কেটপ্লেসের জন্য দুর্দান্ত ফ্রি অ্যাপস, সরঞ্জাম এবং সংস্থানগুলির সম্পূর্ণ তালিকা সম্পর্কে জানতে আপনি এখানে মন্তব্য করতে পারেন। এই অ্যাপ্লিকেশন এবং সংস্থানগুলি ব্যবহার করা আপনার ড্রপশিপিং ব্যবসাকে পরিচালনা করা আরও সহজ করে তোলে।
এটি আপনাকে আরও ব্যবসায়ের উৎপাদন করার সময় গ্রাহকদের আরও ভাল অনলাইন শপিংয়ের অভিজ্ঞতা সরবরাহ করতে সহায়তা করে। আপনার অ্যাপ্লিকেশনটি আপনার শপিফাই বা অন্যান্য মার্কেটপ্লেসের সাথে সংযুক্ত করার জন্য আপনার ভাল ডিজিটাল মার্কেটারের সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে।
১১.দুর্দান্ত পণ্য ছবি আপলোড করুন-
শেষে, আপনার ড্রপশিপিং ব্যবসা থেকে আপনি বিক্রি হওয়া প্রতিটি পণ্যের সাথে সম্পর্কিত ছবি গুলি আপলোড করুন।
আপনি কীভাবে ছবি ব্যবহার করতে পারেন তার কয়েকটি উদাহরণ সন্ধান করুন, অন্যরা ইবে এবং অ্যামাজনের মতো গ্লোবাল ই-কমার্স গুলো দেখে থাকেন। তারা কীভাবে আকর্ষণীয় ছবি পোস্ট করতে পারে এবং প্রতিটি পণ্যের সাথে যাওয়ার জন্য সঠিক Content লিখতে পারে তা দেখুন। আপনি যে ধরণের তথ্য অনুসন্ধান করেন এবং লোকেরা কী ধরণের তথ্য অনুসন্ধান করে সে সম্পর্কে আপনি এই ওয়েবসাইটগুলি থেকে অনেক কিছু শিখতে পারেন।
এখানকার প্রযুক্তিটি গ্রাহককে না দেখে অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করতে সক্ষম হয়। আপনার চিত্র এবং বিবরণ যত ভাল হবে, আপনি ব্যবসায়ী হিসাবে নেতৃত্ব প্রদান করার সম্ভাবনা তত বেশি। মনে রাখবেন, অ্যামাজনকে তার পণ্যের বিবরণ এবং চিত্রের অফারটির জন্য সূক্ষ্ম কাজ করতে কয়েক বছর সময় নিয়েছিল।
১২. আপনার নিজস্ব অ্যাপ্লিকেশন চালু করুন-
বাংলাদেশের সমস্ত অনলাইন ক্রয়ের মধ্যে স্মার্টফোনগুলোর পরিমাণ ৪০% থেকে ৬০%।
কারণ সস্তা স্মার্টফোন এবং সাশ্রয়ী মূল্যের উচ্চ গতির মোবাইল ইন্টারনেট সেবা এখন সারা বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
আপনি হয় তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে আপনার ড্রপশিপিং ব্যবসা এবং পণ্যগুলির বিজ্ঞাপন দিতে পারেন অথবা আপনার নিজস্ব অ্যাপ চালু করুন। এটি একটি চরম সত্য যে সর্বাধিক অনলাইন কেনাকাটা মোবাইল ডিভাইস থেকে দ্রুত ঘটে থাকে। অতএব, বাংলাদেশের প্রতিটি ব্যবসায়ের প্রসার এবং উন্নতি করতে চায় এমন প্রতিটি ড্রপারের জন্য অ্যাপ্লিকেশন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
১৩. বিজ্ঞাপনে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন-
আপনি ফেসবুক পেজ, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, পিন্টারেস্ট, লিংকডইন এবং অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে যে কোনো ব্যবসায়ের বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। এটি স্বাভাবিক বিজ্ঞাপনের তুলনায় সস্তা, এতে কম ব্যয়বহুল বিজ্ঞাপন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও, আপনার ড্রপশিপিং ব্যবসায়ের জন্য একটি ব্লগসাইট খুলুন এবং আপনি যে পণ্যগুলো বিক্রি করবেন সে সম্পর্কে আকর্ষণীয় এবং সত্য বিবরণ লিখুন। লোকেদের ততৎক্ষণাত অর্ডার দেওয়ার জন্য ব্লগে অনুমোদিত বিপণন লিঙ্ক সরবরাহ করুন। ইউটিউব আপনাকে একটি ফ্রি ভিডিও চ্যানেল খুলতে দেয়। আপনার পণ্যগুলি সম্পর্কে দুর্দান্ত ভিডিও পোস্ট করতে এবং এটি দিয়ে অর্থ আয় করতে এই মাধ্যমটি ব্যবহার করতে পারবেন । প্রকৃতপক্ষে, আপনি ভিডিওগুলি তৈরি করতে গ্রাহকের সন্তুষ্টি করতে পারেন। এটি আপনাকে নতুন গ্রাহকদের সন্ধান করতে এবং আপনার বিক্রয় বাড়াতে সহায়তা করে। সাধারণত, সরল টিজার বিজ্ঞাপন যা ড্রপশিপিং পণ্যটির অন্তর্দৃষ্টি সরবরাহ করে।
সবচেয়ে বেশি করা কিছু প্রশ্নের উত্তর-
ড্রপ শিপিংয়ে মূলত কাজ করে যখন একটি ড্রপশিপার তৃতীয় পক্ষের যেমন পাইকার বা ই-কমার্স স্টোরের সাহায্যে অর্ডারগুলো পূরণ করে থাকে যেগুলো আরও কম দামে পণ্যটি বিক্রয় করে থাকে ৷ যেমন AliExpress বেশিরভাগ ড্রপশিপাররা সরাসরি চীনের উৎপাদকের নিকট থেকে পণ্য ক্রয় করে কারণ বেশিরভাগ পণ্যের দাম চীনে বেশ কম। কোনো পণ্যের জন্য পাইকারের দাম যদি $৫ হয়। একটি ড্রপশিপার এটিকে $৮ বিক্রয় করবে এবং নিজের জন্য $৩ রাখবে। বেশিরভাগ ড্রপশিপাররা উচ্চ ক্রয়ক্ষমতা সম্পন্ন দেশগুলো টার্গেট করে থাকে।
কাদের ড্রপ শিপিং করা উচিত? এটি কার জন্য উপযুক্ত হবে?
বেশ, এখন যেহেতু আমরা ড্রপশিপিং ব্যবসায়ের সুবিধাগুলি এবং প্রতিবন্ধকতাগুলি জানি, এখন কেবলমাত্র একটি ডোমেন ও হোস্টিং এবং ড্রপ শিপিং শুরু করার সময় এসেছে। না, এমনটা ভাবা ঠিক নয়
ড্রপশিপিং এমন কোনো ব্যবসা নয় যেটি যে কেউ শুরু করতে পারেন ! আমরা এমন একটি লোকের তালিকা তৈরি করেছি যারা এই জাতীয় অনলাইন ব্যবসায় আরও সফল হতে পারে।
১. প্রারম্ভিক উদ্যোক্তাগণ
ব্যবসায় প্রবেশ করতে আগ্রহী উদ্যোক্তাগণ, যারা নতুন ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন। যেহেতু তারা স্টার্টআপ খেলাটিতে একদম নতুন, তাই প্রক্রিয়াটি শিখতে তাদের খুব কষ্ট হবে এবং সময় লাগবে প্রচুর । তবে ভাল হলো তারা সতেজ এবং ধারণাগুলো বোঝার জন্য প্রস্তুত। আমাদের মতে, এই নতুন প্রবেশকরা ড্রপশিপ খেলাকে পুরো নতুন স্তরে নিয়ে যেতে পারে খুব সহজে।
২. বাজেট উদ্যোক্তা
বাজেটের উদ্যোক্তারা হলো গণিতের উইজার্ড ৷ তারা তাদের লাভ এবং ক্ষতিসহ সমস্ত কিছু হিসাব করে এবং তাদের পরবর্তী সাফল্যের জন্য মাপদণ্ড রাখে। ড্রপশিপিং সেই সকল লোকদের জন্য একটি আদর্শ ব্যবসা হতে পারে। কারণ নগদ-প্রবাহকে উঁচু রাখার জন্য তারা বিশদতম সংখ্যায় গ্রাইন্ড এবং প্রক্রিয়া তৈরি করবে ৷
৩. ই কমার্স স্টোরের মালিকগণ
ই-কমার্স স্টোরের মালিকরা পেশাদার। ই-কমার্স হলো তাদের জন্য রুটি এবং মাখনের মত। ড্রপ শিপিং চ্যালেঞ্জ নেওয়া তাদের নিকট তেমন কিছু না ৷ তারা খুব সহজেই ড্রপ শিপিং ব্যবসায় সফল হতে পারে কারণ তারা তাদের গ্রাহকদের, অ্যাডসেট গুলি কিভাবে রূপান্তর করতে হয় এবং কিভাবে বাজারকে টার্গেট করতে হয় তা তারা জানে। তারা ড্রপশিপিং খেলার পণ্ডিত ৷
৪. কর্মতৎপর ব্যক্তিগণ
কর্মতৎপর ব্যক্তিগণ স্থায়ী দিনের কাজ করে থাকে। তারা কেবল কিছু টাকা উপার্জনের চেষ্টা করছে। তারা আরও নতুন অর্থোপার্জন করতে পারে এমন নতুন পন্থা শিখতে সর্বদা প্রস্তুত। তবে তাদের শুরুতে কিছু প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হতে পারে ৷ তবে পুরো ড্রপ শিপিং প্রক্রিয়াটি কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে পারলে এই কাজ হাতে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত ৷
কিভাবে একটি ই-কমার্স ড্রপ শিপিং ব্যবসায় শুরু করবেন?
একটি ড্রপ শিপিং ব্যবসায় কয়েক মিনিটের মধ্যে শুরু করা যাবে, যদি আপনার এই বিষয়ে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকে ৷
ড্রপ শিপিং ব্যবসায় লঞ্চ করে আপনার যা যা দরকার হবে-
১. একটি নিশ বা বিষয় নির্বাচন করতে হবে
২. প্রতিযোগী বিশ্লেষণ করতে হবে
৩. আপনার পণ্যের জন্য সরবরাহকারী নির্বাচন করতে হবে
৪. একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নির্বাচন ও তৈরি করতে হবে
৫.একটি সঠিক বিপণন এবং গ্রাহক অধিগ্রহণ কৌশল তৈরি করুন
৬. পণ্য অর্ডার গ্রহণ শুরু করুন
৭. এভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করুন