প্রযুক্তি বিশ্বে সেপ্টেম্বর মাসকে অনেকে মজা করে বলেন ‘TECHTEMBER’। কারণ এই মাসে বিশ্বের নামীদামী জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের টেক প্রোডাক্ট লঞ্চ করে থাকে। বিশেষ করে অ্যাপল। সারাবিশ্বের সবাই তাকিয়ে থাকে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে মঙ্গলবারের অ্যাপল ইভেন্টের দিকে।
অ্যাপলের এইবারের ইভেন্টে থাকছে আইফোন ১৩, আইফোন ১৩ মিনি, আইফোন ১৩ প্রো, আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স, অ্যাপল ওয়াচ এবং আইপ্যাড। যদিও ফ্যানরা আগে থেকেই ‘রিউমর’ এর মাধ্যমে জেনে ফেলেন কি কি ফিচার থাকছে আইফোনে, তারপরও সবাই এই ইভেন্টে চোখ রাখে ফাইনাল কনফার্মেশনের জন্য। অর্থাৎ তাদের পাওয়া রিউমর এর সাথে অ্যাপলের পন্যের মিল আছে কিনা মিলিয়ে নেয়ার জন্য।
তো চলুন দেখে নেয়া যাক কি কি থাকছে এইবারের আইফোন ১৩-এ
আইফোন-এর ডিসপ্লে-
গতবারের চেয়ে এবারের আইফোন-এর ডিসপ্লে কিছুটা বড় হয়েছে। যেখানে আইফোন ১২ প্রো ম্যাক্সে দেখেছিলাম ৬.৫ইঞ্চি এক্সডিআর ডিসপ্লে, সেখানে নতুন আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স-এ রয়েছে ৬.৭ ইঞ্চি অল স্ক্রিন ওলেড(OLED) ডিসপ্লে। এছাড়াও পিক্সেল রেজ্যুলেশন কিছুটা বেড়েছে। বর্তমান আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্সে রয়েছে ২৭৭৮ বাই ১২৮৪ পিক্সেলের ডিসপ্লে। যা গতবছরের মডেলে ছিলো ২৬৮৮ বাই ১২৪২ পিক্সেল।
এবাররের ইউজাররা ব্রাইটনেস ব্যালেন্সও আগের চেয়ে ভালো পাবেন। কারণ এবার ডিসপ্লেতে ব্যবহার করা হয়েছে ১০০০ নিটস(nits) ম্যাক্স ব্রাইটনেস।
আরেকটি নতুন ফিচার হলো ডিসপ্লে রিফ্রেশ রেইট, যা অ্যান্ড্রয়েড ইউজাররা বহু আগে থেকেই ব্যবহার করে আসছে। তবে অ্যাপল দাবি করছে তাদের রিফ্রেশ রেইট-এ থাকছে প্রো-মোশন টেকনোলজি, যার মাধ্যমে অ্যাডাপ্টিবিলিটির সর্বোচ্চ সুবিধে পাওয়া যাবে।
এতে করে আপনার ফোনের ডিসপ্লের প্রয়োজন অনুযায়ী রিফ্রেশ রেট বাড়তে কমতে পারে। অ্যাপল তাদের লাইভ ইভেন্টে এরকম অ্যানিমেশনের মাধ্যমে দেখিয়েছে। যেখানে দেখা যায় ইন্সট্যান্ট রিফ্রেশ রেইট চেঞ্জ হয়।
এগুলো ছাড়া ডিসপ্লেতে তেমন আর কোন বড় ধরণের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি।
আইফোন-এর প্রসেসর-
আইফোনের প্রসেসর-এর কর্মদক্ষতা নিয়ে সন্দেহের কোন রকম অবকাশ নেই। বাজারে যতগুলো কম্পিটিটর রয়েছে সবার তুলনায় আইফোনের প্রসেসর অত্যন্ত দ্রুততর এবং ধারাবাহিক। তাই আইফোনের প্রসেসর-এর ধারাবাহিকতা অনুযায়ী এবারের প্রসেসর এর নাম A15 Bionic chip।
তবে গতবারের চেয়ে যে বেশি উন্নত কিছু ফিচার নিয়ে এসেছে তা বলা যায় না। নতুন হিসেবে শুধুমাত্র ৫ কোরের জিপিইউ ব্যবহার করা হয়েছে এইটুকুই। এছাড়া কাগজে কলবে আর বেশি কিছুর পরিবর্তন নেই। আগের মতই ৬ কোরের সাথে দুটি পারফর্ম্যন্স এবং চারটি ইফিশিয়েন্সি কোর এবং ১৬ কোরের নিউরল ইঞ্জিন রয়েছে।
আইফোন-এর কালার-
গতবারের মত এবারও আইফোন গুলো পাওয়া যাবে চারটি ভিন্ন ভিন্ন কালায়র ভেরিয়েন্টে। তবে নতুন করে যুক্ত হলো ‘সিয়েরা ব্লু’। এছাড়া বাদবাকি কালারগুলো হলো- গোল্ড, গ্রাফাই্ট, এবং সিলভার।
সাইজ এবং ওজন-
এবারের আইফোন প্রো ম্যাক্স-এর উচ্চতায় খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। যা গতবারের মত ৬.৩৩ ইঞ্চি রয়েছে। এছাড়া ওজনও সামান্য বৃদ্ধি পেয়ছে যা গতবারের প্রো ম্যাক্স-এর তুলনায় ১২ গ্রাম বেশি।
প্রতিরোধ ব্যবস্থা-
এখানেও খুব একটা ফিচারের পরিবর্তন হয়নি। এখন সর্বোচ্চ ৬ মিটার গভীরে ৩০ মিনিট পর্যন্ত পানি রোধ করতে পারবে।
আইফোন-এর ক্যামেরা-
ফটোগ্রাফিক স্টাইল নামে নতুন একটি ফিচার এনেছে এবারের আইফোন ক্যামেরাগুলোতে। এছাড়া 3X অপটিকাল জুম ইন, 2X অপটিকাল জুম আউট এবং 6X অপটিকাল জুম রেইঞ্জ রয়েছে নতুন ফোনে। ডিজিটাল জুম এখন করা যাবে সর্বোচ্চ 15X।
টেলেফটো লেন্স-এ এখন ƒ/2.8 aperture এ ছবি তোলা যাবে। সাথে ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ƒ/1.5 aperture এবং আল্ট্রা ওয়াইড ƒ/1.8 aperture এ ক্যাপচার করা যাবে সবকিছু। সাথে যুক্ত করা হয়েছে স্মার্ট এইচডিআর ৪।
ভিডিয়ো ক্যামেরা-
আইফোনের এবারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফিচারের মধ্যে এটি অন্যতম। তারা নতুন করে সিনেম্যাটিক মোড সংযুক্ত করেছে যেখানে একেবারে প্রফেশনাল লেভেলে ভিডিয়ো ধারণ করা যাবে। সিনেম্যাটিক মোডের আপাতত ক্যাপাসিটি ১০৮০পি’র ৩০এফপিএস-এ।
এছাড়াও প্রোরেস ভিডিয়ো রেকর্ড করা যাবে সর্বোচ্চ ৪কে ৩০ এফপিএস রেজ্যুলেশনে। তবে এই ফিচার সব ফোনে থাকবে না। শুধুমাত্র ১২৮ জিবি স্টোরেজ-এর বেশি ক্যাপাসিটি ফোনগুলোতে দেখা মিলবে এই ফিচারের।
এছাড়া ৩এক্স অপটিক্যাল জুমের সাথে ডিজিটাল জুম করা যাবে সর্বোচ্চ ৯এক্স অবধি। বাদবাকি সবগুলো ফিচার গতবারের মতই থাকছে।
ফ্রন্ট ক্যামেরা-
ফ্রন্ট ক্যামেরায় নতুন কোনরকম চমক নেই। আগের মতই সবকিছু থাকছে। শুধু নতুন করে পটোগ্রাফিক স্টাইল নামে একটি ফিচার সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া পেছনের ক্যামেরাগুলোর মত এখানেও সিনেম্যাটিক মোড এওং প্রোরেস ফিচার ব্যবহার করা সম্ভব হবে। রিফ্রেশ রেইট ব্যাক ক্যামেরার মত সমান থাকছে।
এছাড়া গতবারের মত ডিপ ফিউশন, কুইকটেইক ভিডিয়ো এবং অ্যানিমোজি মিমোজি তো থাকছেই।
স্টোরেজ-
স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রির জগতে আইফোন ১৩ হলো প্রথম ফোন যেখানে সর্বোচ্চ ১ টেরাবাইট রোম ইউজ করা হয়েছে। স্মার্টফোন ক্যাপাসিটি শুরু হয়েছে ১২৮ জিবি থেকে। তবে আপনি যদি বেইস ভেরিয়েন্ট নিয়ে থাকেন থাহলে কয়েকটি ফিচার মিস করে যেতে পারেন। যেমন ভিডিয়ো রেকর্ডিং এর ক্ষেত্রে আপনি যদি বেইস ভেরিয়েন্ট অর্থাৎ ১২৮ জিবি স্টোরেজ ব্যবহার করেন তাহলে ৪কে রেজ্যুলেশনে ভিডিয়ো ধারণ করতে পারবেন না।
ব্যাটারি-
আইফোনের ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কতটুকু বৃদ্ধি করেছে তা সরাসরি না জানালেও অ্যাপল তাদের ইভেন্টে বলেছে ভিডিয়ো প্লে-ব্যাক টাইপ সর্বোচ্চ ২৮ ঘন্টা হতে পারে। এবং স্ট্রিমড ভিডিয়ো’র ক্ষেত্রে সেটি হতে পারে সর্বোচ্চ ২৫ ঘন্টা। এছাড়া ৩৫ মিনিটে ৫০% চার্জ সম্পন্ন হবে বলে তারা ইভেন্টে জানিয়েছে।
গতবারের মত এবারেও ম্যাগসেইফ এবং কিউআই ওয়ারলেস চার্জিং রয়েছে আইফোনে। তবে মজার ব্যপার হলো এখনও আইফোন লাইটেনিং পোর্ট ব্যবহার করছে। যেখানে বাজারে টাইপ সি এর মত অ্যাডভান্স লেভেলের চার্জিং সিস্টেম রয়েছে।
তাদের ম্যাকবুকে টাইপ-সি ব্যবহার করলেও আইফোন, আইপ্যাড কোনটিতে টাইপ সি’তে শিফট করার লক্ষন দেখা যায়নি। অনেকে ধারণা করেছিলো এবারের আইফোন লঞ্চ ইভেন্টে হয়তো টাইপ সি’র দেখা পাবে। কিন্তু ফ্যানরা এবারও হতাশ হলো। এছাড়া আরেকটি বড় ড্রব্যাক হলো ২০ওয়ার্টের চার্জার কিনতে হলেও সেটি আলাদা প্রাইসে কিনতে হয়। অ্যাপল কিছু ক্ষেত্রে পুশ করে গ্রাহকদের, তাদের পন্যগুলো নিতে।
অ্যাপলের চমৎকার উদযোগ-
অ্যাপল সবসময় একটু বেশি স্পেশাল অনেক গ্রাহকদের কাছে। তাদের কার্যক্রমগুলোও স্পেশাল। প্রোডাক্ট রেড নামে অ্যাপলের স্পেশাল ফান্ড রয়েছে। যেখানে পরিস্থিতি অনুযায়ী ফান্ডিং এর জন্য অনুদান প্রদান করা হয়। যেমন এইচআইভি, ক্যান্সার এর মত জটিল রোগের মত ফান্ড রেইজিং করে অ্যাপল প্রোডাক্ট রেড প্রজেক্টের মাধ্যমে।
তবে যেহেতু এখন করোনা পেনডেমিক-এর সময়, তাই এখনকার অ্যাপল রেড প্রোডাক্টের সব টাকা জমা হয় এই খাতে। অ্যাপলের এই রেড প্রোডাক্ট ফান্ডে টাকা আসে লাল কালারের আইফোন বিক্রির মাধ্যম হতে। অর্থাৎ অ্যাপলের যেকোন রেড প্রোডাক্ট কিনলে সরাসরি এই প্রজেক্টে টাকাটা যুক্ত হয়ে যাবে।
The Review
iPhone 13
PROS
- Outstanding design, sturdy and water-proof
- One of few properly high-end phones that can pass for 'compact'
- Brightest OLED screen we've seen, super accurate, Dolby Vision, sort of 120Hz
- Loud stereo speakers
- Unmatched performance, 5G
- Great all-round photo and video quality across all four cameras
CONS
- Stale looks, the notch should have been gone by now
- Compact as it may be, the 'small' 13 Pro weighs a lot
- 120Hz refresh rate not widely available in third-party apps at launch
- Battery life not up to the Max's standard
- The chipset is prone to heavy throttling under max load
- The fast charging isn't very fast
- iOS (with its limitations) remains a love it or leave it affair