অবশ্যই সম্ভব!
৩০ হাজার টাকার গেইমিং পিসিতে PUBG Mobile, Free Fire, GTA 5, CS:GO, Valorant, APEX LEGENDS, Fortnite এই ধরনের গেইমগুলো 720p সেটিংসে 60 FPS এর আশেপাশে খেলা সম্ভব। পাশাপাশি Full HD 1080p Video Editing, Photoshop, Freelancing, Programing, Coding এগুলোও সম্ভব। আর অফিসের কাজ, অনলাইন ক্লাসসহ নিত্যদিনের প্রায় সকল কাজ তো অনায়াসেই সম্ভব।
কীভাবে?
বর্তমানে পিসি পার্ট গুলোর মূল্য আকাশচুম্বী৷ আইফোন ওর মত কিডনি দিয়ে ডিল করার মত অবস্থা। তবে ঘাবড়ানোর কারণ নেই। শখের দাম লাখ টাকা যেমন সত্য, তেমনি ৩০ হাজার টাকার পিসিতে গেইমিং এর শখ মেটানোও সম্ভব। তবে তার জন্য দরকার যথেষ্ট জ্ঞান আর অনুসন্ধানের ভিত্তিতে পিসি পার্ট গুলো সিলেক্ট করা। তাহলে কি কি পার্ট সিলেক্ট করবো? তার আগে, একটি জিনিস মাথায় রাখা দরকার। তা হলো এই পিসি থেকে এটার সর্বোচ্চ কার্যকারিতা বা আউটপুট পেতে হলে কিছু পরিবর্তন করতে হবে (সেই ক্ষেত্র গুলো তে সেগুলো উল্লেখ করে দেওয়া হবে) সেটা হতে পারে কোনো এক্সট্রা পার্ট কেনা বা তূলনামূলক বেশি মূল্যের পার্ট কেনা। তবে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার উপর। এই পরিবর্তনগুলো করলে এই পিসির সর্বোচ্চ আউটপুট পাবেন আর না করলে আসলে তেমন কোনো সমস্যাও হবে না। কারণ তা না করেও আশানুরূপ আউটপুট পাবেন ইনশা আল্লাহ।
এখন পার্ট গুলো একে একে আলোচনা করা যাক!
Processor – Ryzen 3 3200g (with Radeon Vega8 Graphics)
এই বাজেটে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এবং উপযুক্ত প্রসেসর হলো এটি।
এটিতে রয়েছে 4 Core, 4 Thread, যা বিশাল সংখ্যক গেইম এর মিনিমাম চাহিদা থাকে। এছাড়াও এটির Minimum Frequency হলো 3.6 GHz এবং boost frequency হলো 4.0 GHz। এর রয়েছে মোট 6MB Cache এটি একটি 2nd Generation এর প্রসেসর যা 12 nm এর টেকনোলজির তৈরী। এর রয়েছে Dual Channel এর DDR4 RAM এর সাপোর্ট যার ম্যাক্সিমাম Frequency 2933 MHz।
সোজা ভাষায় এই বাজেটে গেইম খেলার জন্য এই প্রসেসর যথেষ্ট ভালো এবং নির্দ্বিধায় একে বেছে নেওয়াই যায়। তবে এটিকে বেছে নেওয়ার পিছনে যে বিষয় টা সবচেয়ে বেশি কাজ করে তা হলো এতে থাকা
Integrated Radeon Vega 8 Graphics এই GPU (Graphics Processing Unit) থাকার জন্য আর এক্সট্রা গ্রাফিক্স কার্ড কেনার বাধ্যবাধকতা না থাকাতেই এটি
পছন্দের শীর্ষে থাকে। এখন আসা যাক এই Integrated GPU এর ব্যাপারে। Radeon Integrated Vega 8 Graphics, 14 nm টেকনোলজির তৈরি এবং এর রয়েছে ৮ টি core, এটি সাপোর্ট করে DirectX 12 যা নিশ্চিত করে যে আধুনিক AAA মানের গেইম গুলো যাতে চলতে পারে। তাই এই GPU থাকায় Dedicated Graphics Card ছাড়াও চালিয়ে নেওয়া যায় এবং এই কম্বিনেশন টা বাজেট বিল্ড এর ক্ষেত্রে বরাবরই দুর্দান্ত।
মূল্যঃ 14500 টাকা
Motherboard: Gigabyte GA-A320M-
এর রয়েছে Dual Channel DDR4 Ram Support এবং এটি Micro ATX Form Factor এর তৈরী। এটিতে NVMe M.2 SSD ব্যবহার করা যাবে এবং ২ টি Ram Slot আছে যেখানে সর্বোচ্চ 32GB ব্যবহার করা যাবে। এটিতে ৩ টি PCI Slot আছে এবং রয়েছে SSB 3.0 পোর্ট। এটি এই বাজেট বিল্ড এর জন্য একটি উপযুক্ত মাদারবোর্ড ও আমাদের প্রসেসর কেও টিও সাপোর্ট করে।
মূল্যঃ 5900 টাকা
RAM – G.Skill 8 GB DDR4 2666 MHz (1 টি)
কিছু ব্যাপার বিবেচনা করে 8 GB এর ১ টি Ram সিলেক্ট করা হয়েছে। যেগুলো হলো
১. আমাদের প্রসেসর এর সাথে Radeon Vega 8 এর Integrated GPU রয়েছে। এটি যেহেতু কোনো Graphics Card নয় তাই এটিতে আলাদা করে কোনো Video Ram
দেওয়া নেই। যার ফলে Video RAM, সাধারণত Main Ram Memory থেকেই Ram ব্যবহার করে থাকে। তাই Main Ram যত বেশি নেওয়া যাবে পারফরম্যান্সও তত বেশি
ভালো হবে।
২. এই প্রসেসর আবার Dual Channel Ram Support করে। এক্ষেত্রে ১ টির পরিবর্তে ২ টি Ram ব্যবহার করলে এর পারফর্মেন্স কয়েক গুন বেড়ে যায়। তাই এই ২ টি বিষয় মাথায় রেখে RAM বাছাই করতে হবে। তবে বাজেট বিবেচনায় আবার 2 টি 8 GB এর Ram কেনা কষ্টসাধ্য। তাই আপাতত 1 টি 8 GB এর Ram আমরা
ব্যবহার করব। এই প্ল্যান মোতাবেক যে, ভবিষ্যতে আরো একটি 8 GB এর Ram কিনব। তবে ভবিষ্যতে আপগ্রেড করার সম্ভবনা কিংবা পরিকল্পনা না থাকলে এখন 2 টি 4GB এর Ram ব্যবহার করাটা ভালো হবে। তবে Ram যত বেশি হবে পারফরম্যান্স তত বেশি হবে বিধায় 8+8=16 GB RAM এর প্ল্যানটিই অর্থাৎ ভবিষ্যতে আপগ্রেডের প্ল্যানটিই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত হবে। তবে তা একান্তই সম্ভব না হলে 4+4=8 GB RAM ব্যবহার করাটাও ভালো সিদ্ধান্ত।
এটি একান্তই আপনার উপর নির্ভর করছে।
মূল্যঃ 4300 টাকা (1×8 GB)
2400×2=4800 টাকা (2×4 GB)
Storage – Transcend 110S 128GB M.2 2280 PCIe SSD
Hard Disk আর SSD এর মধ্যে SSD সিলেক্ট করার কারণ হলো ল্যাগ আর স্লো পিসি এর যন্ত্রণা থেকে আপনাকে বিরত রাখা। SSD ব্যবহার করার ফলে সকল কাজ অতি দ্রুত বিনা ল্যাগ এ করা যাবে। পিসি স্টার্ট করা থেকে শুরু করে গেম ওপেন হওয়াসহ সকল কিছুই। স্টোরেজ একটু কম হয়ে যাচ্ছে ঠিক, তবে বাজেট আর স্মুথ এক্সপেরিয়েন্স পাওয়ার জন্য এইটুকু ত্যাগ করতে হবে। সাজেশন থাকবে গুগল ড্রাইভ এর সঠিক করা।
এতে স্টোরেজ এর ঘাটতি সামান্য হলেও কমানো যাবে। তবে সামান্য বাজেট বাড়ানো সম্ভব হলে 240/256 GB এর SSD সিলেক্ট করার পরামর্শ দেওয়া হলো। অথবা আপনার প্রয়োজন অনুসারে 128 GB SSD এর সাথে 500/1000 GB Hard Disk ও সিলেক্ট করা যেতে পারে। আপনার নিজের চাহিদা ও প্রয়োজন এর উপরই সব নির্ভর করে।
মূল্যঃ 2700 টাকা (128 GB SSD)
PSU – Antec Atom 350 Watt-
অনেকেই PSU (Power Supply Unit) কে তেমন একটা পাত্তা দেন না।এটির প্রতি অবহেলা করাটা আপনার ক্রাশ এর আপনাকে অবহেলা করার মতই কিছুটা। কারণ PSU
ভালো মানের না হলে আমাদের পিসির সবগুলো পার্টে যতটুকু কারেন্ট দরকার ততটুকু পৌছাতে পারে না। যেটা অবশ্যই একটি সমস্যা। তাই আপনার ক্রাশ এর যেমন উচিত আপনাকে আপন করে নেওয়া তেমনি আপনারও উচিত ভালো মানের একটা PSU কে আপন করে নেওয়া।
এক্ষেত্রে এই PSU টি আমরা বাজেট বিবেচনায় সিলেক্ট করেছি। এটি 350 Watt এর একটি PSU। তবে যদি বাজেট বাড়ানো সম্ভব হয় তবে 450 Watt এর Antec বা Cooler Master এর একটি PSU নিয়ে নিতে পারেন।
মূল্যঃ 2250 টাকা
Casing-
আমরা কোনো ফিক্সড Casing এর মডেল উল্লেখ করব না। কারণ একেকজনের পছন্দ একেক রকম।তাই একান্তই আপনাদের পছন্দ অনুযায়ী মডেল এবং ডিজাইন এর Casing কিনতে পারেন। তবে ফ্যান গুলোর ব্যপারটা তথা Casing এর কুলিং এর ব্যাপার টা মাথায় রাখতে হবে। এজন্য পিছনে 1 টি এবং সামনে 2-3 টি In built ফ্যান যাতে থাকে এটি খেয়াল রাখলেই হবে।
পিসি বিল্ড এর শেষ পর্যায়ে এসে গিয়েছি আমরা। এখন সব গুলো পার্ট এর মূল্য যোগ করলে হয়-
(14500+5900+4300+2700+2250)= 29650 (Casing & amp, Monitor বাদে)
অফলাইনে বা সামনাসামনি গিয়ে কেনার ক্ষেত্রে কিছু ছাড় এর আশা করাই যায়। সেক্ষেত্রে মোট মূল্য আরো কম হবে। অফলাইনে বা সামনাসামনি গিয়ে কেনার ক্ষেত্রে কিছু ছাড় এর আশা করাই যায়। সেক্ষেত্রে মোট মূল্য আরো কম হবে। তবে বাজারে প্রোডাক্ট স্বল্পতা থাকলে এই আশা করাটা অনুচিত হতে পারে। তবে এর আশংকা আসলে খুব ই কম। সুতরাং আমাদের এখন শুধু Monitor কেনা বাকি। এক্ষেত্রেও আমরা কোনো মডেল উল্লেখ করে আপনাকে সীমাবদ্ধ করে ফেলব না। 10000-12000 টাকার মধ্যে
(Monitor + Casing) দুটিই কিনে ফেলতে পারবেন আশা করা যায়। সেক্ষেত্রে মোট মূল্য 32650-34650 টাকা হলেও এর থেকে কিছু কমেই সম্পূর্ণ পিসি কিনে ফেলতে পারবেন।
আমাদের এই ৩০ হাজার টাকার গেইমিং পিসি বিল্ড করা এখানেই শেষ। এর গেইমিং পারফর্মেন্স নিয়ে আপনি যথেষ্ট সন্তুষ্ট থাকবেন ইনশা আল্লাহ। তবে যে আপগ্রেড গুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলো করলে পূর্বে উল্লেখিত গেইমিং এক্সপেরিয়েন্স থেকেও আরো ভালো এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া যাবে।
(উল্লেখ্য যে সবগুলো পার্টের মূল্য বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচিত অনলাইন দোকানগুলো থেকে
উল্লেখ করা হয়েছে এবং সকল পণ্য বর্তমানে স্টকে রয়েছে বা মাঝে মাঝে নাও থাকতে পারে)
From start to finish, this blog post had us hooked. The content was insightful, entertaining, and had us feeling grateful for all the amazing resources out there. Keep up the great work!
Your content always manages to captivate and educate me. Keep up the fantastic work!