Productivity কী?
সারাদিন ধরে অঢেল কাজ করাকে Productivity বলে না। Productivity হল আপনি আপনার সময়কে কীভাবে সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগাবেন। প্রোডাক্টিভিটি বাড়ানোর মূলমন্ত্র হচ্ছে, “ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না”।
আপনার কি কখনও দিনের শেষে এসে মনে হয়েছে যে, পুরো সময়টা খুব দ্রুতই পার হয়ে গিয়েছে? আপনি যতটা ভাবছেন, এমন মনে হওয়াটা তার চাইতেও বেশি স্বাভাবিক ব্যাপার। এখন আমাদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য চারপাশে এতকিছু রয়েছে যে দ্রুত এবং বার বার মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়াতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই।
এই কারণটা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আরো যেসব কারণে আপনি প্রোডাক্টিভ হতে পারছেন না, সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
অতিরিক্ত মাল্টিটাস্কিং বা একসাথে অনেক কাজ করার প্রবণতা-
মাল্টিটাস্কিং বা একসাথে একাধিক কাজ করাটা ভালো কোনো কর্মপদ্ধতি না। এমনটা আপনার উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, মাল্টিটাস্কিং আইকিউ কমিয়ে দেয়, মস্তিষ্কের গ্রে ম্যাটার সংকোচিত করে এবং এবং প্রোডাক্টিভিটি প্রায় ৪০% পর্যন্ত কমিয়ে আনে। তাই, যখন হাই পারফর্মেন্স প্রয়োজন, তখন কোনোমতেই মাল্টিটাস্কিং আদর্শ উপায় নয়।
টাইম ম্যানেজমেন্টে দুর্বলতা-
গবেষণায় দেখা গেছে, টাইম ম্যানেজমেন্টে ভালো করতে না পারলে দক্ষতার সাথে কাজ করা যায় না। এ থেকে বোঝা যায়, আপনি সবচেয়ে জরুরি কাজগুলি প্রথমে মূল্যায়ন না করে সব কাজ একসাথে করতে চাচ্ছেন। অথচ প্রোডাক্টিভিটির ক্ষেত্রে এমন দৃষ্টিভঙ্গি ক্ষতিকর। তাই যদি আপনি টাইম ম্যানেজমেন্টে এখনও দক্ষ না হয়ে থাকেন, তাহলে সময় এসেছে বিষয়টাতে গুরুত্ব দেয়ার।
সব সময় “হ্যাঁ” বলা-
আপনার ক্যালেন্ডারের দিকে তাকান এবং এখন পর্যন্ত করার জন্য কী কী কাজের রিমাইন্ডার ঠিক করেছেন, সেগুলি যাচাই করুন। এর মধ্যে কয়টা কাজ আপনি শেষ পর্যন্ত করতে পারবেন বলে মনে করেন? কয়টি কাজের প্রতিশ্রুতি শুধু দায়ে পড়েই দিয়েছিলেন? কয়টি প্রতিশ্রুতি আপনার উদ্দেশ্য পূরণের জন্য আর কয়টি অন্যের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করুন।
যদি অন্যদের অনুরোধ রাখতে গিয়েই বেশি সময় ব্যয় করে থাকেন, তবে তার মানে হলো, আপনি অন্যদের জন্যেই বেশি “হ্যাঁ” বলছেন। তাই এমনভাবে একটা পরিকল্পনা করুন যে, কোনো কাজের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কখন আপনি কড়াভাবে “না” বলবেন, কখন আপনি “দেখি” বা “হয়তো” বলবেন আর কখন আপনি “অবশ্যই” বলবেন। আর তারপর এই সীমানা সবসময় মেনে চলার চেষ্টা করুন।
ব্রেইন ফগ বা চিন্তাভাবনা ঘোলা হয়ে যাওয়া-
যখন মাথায় অতিরিক্ত চাপ থাকে, তখন অ্যাড্রেনালিন, ডোপামিন ও সেরোটোনিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারগুলি ক্ষয় হতে থাকে এবং মাথা ঘোলা হয়ে যাওয়ার অনুভূতি তৈরি হয়। এ থেকে দীর্ঘস্থায়ী স্নায়ুজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে। ফলে চিন্তাশক্তি লোপ পায় এবং স্পষ্টভাবে চিন্তাভাবনা করা যায় না।
এছাড়াও স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া সহ এমন সব সমস্যা তৈরি হয়, যাতে আপনার দৈনন্দিন কাজে সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই কয়েক ঘণ্টা পর পর হলেও আপনার কম্পিউটারের সামনে থেকে বিরতি নিতে ভুলবেন না।
ক্লান্তি-
ক্লান্তির কথা বললে প্রথমেই যে পরামর্শ শোনা যায়, সেটা হলো ঘুমানো। কিন্ত শুধু ঘুমানোর কথা ভাবলেই হবে না, বরং ঘুমের সময়কাল এবং গভীরতা নিয়েও ভাবতে হবে।
অন্ধকার এবং শীতল যেই ঘরে ন্যূনতম শব্দের মতো কোনো বিপত্তি বা ডিভাইসের সাড়াশব্দ নেই, এমন স্থানই একজন প্রোডাক্টিভিটি মানুষের বিশ্রাম নেয়ার জন্য আদর্শ।